শেষবয়সে এসে জীবনে কি লাভক্ষতি হয়েছে তার হিসেব করে….আমিও ওই করতে করতে ফোল্ডার হাতড়ে পেলাম এক ইসবেলাইন স্রাইক। এই বছরের গোড়ার দিকে পাওয়া। আমি স্পটও করিনি, আইডি ও না। চড়া রোদে ব্রহ্মতালু জ্বলে যাচ্ছে। নাসিকে কাঁটাগাছে ভরা নন্দুর-মদমহেশ্বর ড্যামের পথ। মাথা নীচু করে হাঁটছি আর বন্ধুদের থেকে জল চেয়ে খাচ্ছি। ওখানেই নাকি মারীচকে দেখে সীতামায়ের স্বর্ণপিপাসা উথলে উঠেছিল। ওইসব ভাবতে ভাবতে হাঁটছিলাম, লোকের কত্ত লোভ!
জনতা স্পট করলো পাখিটাকে, জনতাই গালাগালি করে ছবিটা তোলাল, তারপর নিজেরাই বাসে উঠে বই দেখে দেখে আইডি করলো। আমি এগারো মাস বাদে পোস্ট করলাম। ওখানে ওই সময়ে ওটা নাকি ভালো স্পটিং হয়েছে, ওরাই বললো, তারপর নিজেরাই নিজেদের পিঠ চাপড়ে দিলো।
স্রাইক পরিবারের অন্য কিছু সদস্য শীতকালে বিশেষতঃ আমাদের চারপাশে বেশ দেখা যায় – ট্রাইকালার, ব্রাউন, উড ইত্যাদি। এদের সবারই চোখের পাশে কাজল টানার মতন দাগ থাকে বলে কাজল পাখি বলে। আবার কসাই পাখিও বলে। একটু নিষ্ঠুর আর খিটখিটে মেজাজের পাখি এরা। এদের খিটখিটে মেজাজ নিয়ে রিঙ্গার ম্যাম একটি সেমিনারে বলছিলেন ‘চিরচিরা মিজাজ কা হোতা হ্যায় ইয়ে স্রাইক। কোই উস্কো হাত নেহি লাগানা চাহতা’। সম্প্রতি একজন প্রবীণ পক্ষীবিশারদকে ঘটনাটা বলতেই উনি বেশ চমকপ্রদ একটা অভিজ্ঞতা বললেন। স্রাইক টিকটিকি ধরে বাবলা কাঁটা গাছে টিকটিকিটিকে বিঁধিয়ে পাশে বসে তার মৃত্যুর অপেক্ষা করছে, এমন উনি ফিল্ডে দেখেছেন….কসাই পাখি সার্থকনামা। অনেকসময় পাখির বাংলা বা স্থানীয় নামগুলি একটু বিশ্লেষণ করলে তাদের শারীরিক বা চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সামনে আসে।
0 comments on “Isabelline shrike”Add yours →