পাহাড় থেকে শীতকালে লোকাল মাইগ্রেট করে এসেছে স্কারলেট ব্যাকড ফ্লাওয়ারপেকার। আশেপাশে কাছাকাছি যত জায়গায় বার্ডিং হয়, তার মধ্যে একমাত্র ব্যারাকপুরে এই পাখিটি আসছে কিছু বছর। স্বভাবতঃই প্রচুর পক্ষীপ্রেমীর ভিড়। তবে যেখানে বেশিরভাগ লোকজন ছবি তোলেন, দেখেছি ওই জায়গা বাদ দিয়েও এই পাখি ব্যারাকপুরের আরো অনেক জায়গায় এসেছে। ৯ সে.মির পাখিটি আকারে চড়াইয়ের চেয়েও অনেক ছোট। পুরুষ পাখিটি ঘন নীল, মাথার ওপর থেকে লেজের পালকের ওপর পর্যন্ত টকটকে লাল। নারী পাখিটি নিয়ম অনুযায়ী হালকা অলিভ রঙের। কেবল ল্যাজের কাছে লাল।
প্রজননের সময় সাধারনভাবে যে কোনো প্রজাতির পুরুষ পাখি দেহের রং প্রদর্শন করে, জোর গলায় ডেকে, ভালো ভাবে নাচ দেখিয়ে মহিলা সঙ্গীকে আকর্ষণ করার চেষ্টা করে। মহিলারা এইসব ব্রিডিং রিসোর্স কোয়ালিটি দেখে বিচার করে সঙ্গী নির্বাচন করেন। কেউ কেউ তো এটাও দেখেন যে পুরুষ পাখি বাড়ি বানাতে পারবেন কিনা, গলা ফুলিয়ে ডেকে শত্রুকে বাসার থেকে দূরে রাখতে পারবেন কিনা, ডিমে তা দিতে কেমন পারবেন কিংবা নিজে কোটরে ঢুকে বাচ্চাকে বড়ো করার সময় পুরুষ পাখি খাবার এনে দিতে পারবেন কিনা! তারমানে পুরুষদের ক্ষেত্রে একটি মেয়ে হলেই হলো, কিন্তু নারীদের ক্ষেত্রে পুরুষদের বেশ কাঠখড় পুড়িয়ে অগ্নিপরীক্ষা দিয়ে আসতে হচ্ছে। এই ইমপ্রেস করার সমীকরণটা একটু ভেবে দেখবেন মেয়েরা। হলুদ শাড়ি, লিটল ব্ল্যাক ড্রেস, রেড গাউন ইচ্ছে হলে পড়ুন কিন্তু ইচ্ছেটা যেন নিজেরই হয়। জাগো গ্রাহক জাগো।
আচ্ছা বাজে না বকে আবার আসি পার্টিকুলার এই স্পিসিসের গল্পে। জানুয়ারিতে তোলা এই ছবি। পুরুষ পাখি কেবল লাল বটলব্রাশ ফুলে মধু খেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে আর মেয়েটি শুকনো ডাল থেকে সরু সরু রোয়ার মতন সংগ্রহ করে মুখে জমিয়েছে। একবারে কিছু জমলে বাসা যেখানে বানাচ্ছে, সেখানে উড়ে গিয়ে রেখে আসছে। এই নেস্টিং মেটিরিয়াল সংগ্রহ করতে মেয়েটি এতই ব্যস্ত ছিল যে যেখানে লোকজন দাঁড়িয়েছিল, তার খুব কাছাকাছি চলে আসছিল, মোবাইলে তুলতে পারলে ভালো হয়, লেন্সে আসেনা এমন। অপেক্ষাকৃত লাজুক এবং সচেতন পুরুষ পাখিটির তেমন কোনো কাজ করতে হচ্ছিলো না। ফাঁকা ময়দানে মধু খেতেও বেশ ট্যান্টরাম নিচ্ছিলেন ভদ্রলোক।
0 comments on “Scarlet backed flowerpecker”Add yours →